ইউজার এক্সপেরিয়েন্স ডিজাইনে সমস্যার প্রতি তোমার নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গী সমস্যাটির ভাল একটি সমাধান করতে পারে আবার সমস্যাটিকে আরো বড় আকার দিতে পারে । তোমার নিজস্ব চাহিদা এবং অভিজ্ঞতা ব্যবহারকারীর চাহিদা এবং প্রয়োজনের বিপরীতে কাজ করতে পারে ।
নিজেকে জান
ব্যবহারকারীকে ভাল ভাবে জানার আগে নিজের দুটি ব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি দিতে হবে:
- তুমি এমন অনেক কিছুই চাও যার সাথে ব্যবহারকারীর চাহিদার কোন সম্পর্ক নেই
- তুমি এমন অনেক কিছুই জান যা ব্যবহারকারীর কোন দরকার নেই
কিছুক্ষণ ধ্যান করে এই বিষয় দুটোকে নিজের মধ্যে স্থায়ীভাবে গেঁথে নাও । আখেরে বিশাল কাজে দিবে !
এ্যাম্পাথি: তারা যা চায় তা’ চাওয়া
ইউএক্সে যে কয়টি শব্দকে অতিরিক্ত মূল্যায়ণ করা হয় তার মধ্যে এ্যাম্পাথি অন্যতম । যদিও এটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার । প্রত্যাহিক জীবনে এবং ইউএক্স এর ক্ষেত্রে তো অবশ্যই ।
কিন্তু এতে একটি গোপন ব্যাপার আছে: সিরিয়াল কিলার না হলে তোমার মধ্যে অবশ্যই এ্যাম্পাথি আছে । আর সিরিয়াল কিলার হলে ইউএক্সকে পেশা হিসেবে না নেওয়াই ভাল । আমরা যা চাই ব্যবহারকারী হয়তো তা’ নাও চাইতে পারে । আর এটা খুব বড় একটা ব্যাপার । এর মানে হলো ব্যবহারকারী সম্পর্কে তুমি যে ধারণা করেছ তা সম্পূর্ণ ভুল হতে পারে ।
গবেষণা কর । ব্যবহারকারীরর সাথে কথা বল । তথ্য উপাত্ত যোগাড় করে পড় । কাউকে লম্বা একটা হাগ (কোলাকুলি করা) দাও । তুমি যখন একটি সমস্যাকে সঠিকভাবে বুঝতে পারবে তখন সেটা তোমার নিজেরও সমস্যা বলে মনে হবে । তুমি সেই সমস্যা সমাধানে মন-প্রাণ ঢেলে দিবে । আর এটাই হলো এ্যাম্পাথি । তুমি সেটাকে সমাধানের জন্য সব সময় চিন্তা করবে । সমস্যাটাকে সত্যিকারভাবে অনুভব করবে এবং সমাধানের পথ খুঁজবে । ভাল কোন সমাধান পেলে অনন্দে আত্মহারা হবে । ইউরেকা ইউরেকা বলে…। আর এ সবই হবে কারণ, তুমি তোমার নিজেকে ব্যবহারকারীর অবস্থানে নিয়ে যেতে পেরেছ, তাদের সমস্যাকে নিজের সমস্যা হিসেবে দেখে সমাধানে পৌঁছেছ । এখন তুমি তাদেরই একজন ।
“আনন্দে দু’ফোটা চোখের জল চলে এল !”
প্রশ্নগুলো নিজেকে কর:
- একটি ফিচার** তোমার ব্যবহারকারীকে দেয়া অথবা নিজের পোর্টফোলিওতে দেয়া, কোনটা তুমি দিতে চাইব?
- ব্যবহারকারী যদি তোমার ডিজাইন পছন্দ না করে তার সম্ভাব্য কারণ কি হতে পারে?
- তুমি কি সত্যিকার ভাবেই অ্যাপ্লিকেশনটি ব্যবহার করছ না কি শুধু “নেক্সট” দিয়ে উৎরিয়ে যেতে চাচ্ছ?
তুমি খুব বেশি জান
তুমি যা জান তার চেয়ে কম জানা মানুষের জন্য ডিজাইন করাই হলো ইউএক্স এর মূল ব্যাপার ।
তারা তোমার থেকে বড় মাপের গাধা না । কিন্তু তারা এ বিষয়ে তোমার থেকে কম জানে মাত্র।
তুমি জান তোমার সাইটকে কাস্টমাইজ*** করতে পারলে সেটা আরো ভাল হবে, কিন্তু ব্যবহারকারী তা জানে না । তুমি জান তোমার সাইটের ম্যানু**** প্রকারভেদ তোমার কোম্পানির জিনিষপত্রের সাথে মিল রেখে করা হয়েছে, কিন্তু ব্যবহারকারী তা’ জান না । তুমি জান যে কন্টেটের***** লাইসেন্স করার জন্য অনেক টাকা খরচ হয় এবং দাম বেশি রাখতে হয়, কিন্তু ব্যবহারকারী সেটা জানে না ।
যেহেতু ব্যবহারকারী জানে না, সেহেতু সে ব্যাপারে সে মাথা ঘামাবে না । এমনকি সে জানলেও ওট নিয়ে দুশ্চিন্তা করবে না । ওটা তার সমস্যাই না । লাইসেন্সিং ফি? ওটা তোমার সমস্যা, আমার না । চাইলেই ৫০ টাকা দিয়ে একটা সিডি কিনে উইন্ডোজ ব্যবহার করতে পারি !
প্রশ্নগুলো নিজেকে কর:
- একেবারেই কোন শব্দ না পড়ে বিষয়বস্তু বুঝতে পারা যাবে?
- ব্যবহারকারী যা খুঁজছে তা পেতে কয়েকটি মাত্র ক্লিক করা লাগলেও এটাই কি তোমার দ্বারা সম্ভব সবচেয়ে ভাল সমাধান?
- তুমি কি একটি ফিচার বিবেচনা করছ এটা ডেভেলপ করতে কত সময় লাগবে তার উপর ভিত্তি করে নাকি এটা ব্যবহারকারীকে কতটা সুবিধা দিবে তার উপর ভিত্তি করে?
- তোমার কি ধারণ বাটনটি আছে বলেই ব্যবহারকারী ক্লিক করবে? (মোটেও না)
* Empathy – অন্যের আবেগ-অনুভূতির সঙ্গে একাত্ম হওয়া । একে আমরা “এ্যাম্পাথি” বলব এখন থেকে ।
** Feature – কিছুর উপাদান বা বৈশিষ্ট হওয়া; এখানে ফিচার বলতে বোঝাচ্ছে কোন একটি কাজ করার সুবিধা । যেমন: একটি ফাইল মুছে ফেলতে পারা একটি ফিচার ।
*** Customize – ব্যবহারকারীর নিজের মতো করে সাজিয়ে নেয়ার সুবিধা । ফেসবুকে আমার কি কি তথ্য অন্যরা দেখবে তা আমি নিজেই ঠিক করে নেই এবং ফেসবুক সেভাবেই দেখায় । এটাকেই কাস্টমাইজ করা বলে ।
**** Menu – খাবার মেনু না ! ওয়েব সাইটের এক পেজ থেকে আরেক পেজে যাওয়ার জন্য মূল যে পেজ লিস্ট থাকে তাকে মেনু বলে ।
***** Content – ওয়েব সাইটে লেখা, ছবি, ভিডিও ইত্যাদি সবই কন্টেন্ট ।